Tuesday, December 25, 2012

হ্যাকারের ফাঁদ চেনার সাতটি উপায় !

মাছ ধরার টোপের মতোই ইন্টারনেটে টোপ ফেলে হ্যাকাররা। ‘আপনি পুরষ্কার জিতেছেন’ কিংবা ‘ফ্রি অফার’-এর নামে স্পাম মেইল সম্পর্কে বেশ পরিচিত ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা। এতে হ্যাকাররা খুব সহজেই নিয়ন্ত্রণ নিতে পারে আপনার পিসি। এমনকি ওয়েবে আপনার স্বাচ্ছন্দ্য বিচরণে আড়িপেতে হ্যাক করতে পারে আপনার মেইলের সব গুরুত্বপূর্ণ তথ্য কিংবা হাতিয়ে নিতে পারে আপনার ওয়েবসাইটের নিয়ন্ত্রণ। হ্যাকারদের ব্যবহৃত বেশ কয়েকটি টুলসের কথা জানিয়েছেন ইউনিভার্সিটি অফ সুরিস এর ডিপার্টমেন্ট অফ কম্পিউটিং -এর ভিজিটিং প্রফেসর এলেন উডওয়ার্ড। যুক্তরাজ্য সরকারের সাইবার সিকিউরিটি ও কম্পিউটিং আইন নিয়েও কাজ করছেন তিনি। সম্প্রতি বিবিসিতে প্রকাশিত হ্যাকিংয়ের ৭ ফাঁদ প্রতিবেদনে তিনি হ্যাকারদের কৌশলগুলো তুলে ধরেন
*******************************************
১।  অসচেতনতা
একটু সচেতন না হলে তথ্যপ্রযুক্তির ভার্চুয়াল দুনিয়ায় আপনার  নিয়ন্ত্রণ চলে যেতে পারে হ্যাকারদের কাছে। হয়তো কোথাও বেড়াতে যাবার আগে আপনি বদলে নেন আপনার সুটকেসের কম্বিনেশন লক নাম্বার কিন্তু সেই আপনিই হয়তো ইমেইল, ফেইসবুক বা এমন কোনো ওয়েবসাইটের পাসওয়ার্ড বিষয়ে উদাসীন। 
দেখা গেছে অনেকেরই ইমেইল পাসওয়ার্ড ‘১২৩৪৫৬’ !

২। কৌতুহল
জন্মসূত্রেই মানুষ কৌতুহলী। কোন ওয়েব সাইটে যদি লেখা থাকে “Do Not Press” সেখানেই মানুষ ক্লিক করে বেশি। এ ধরনের লিংকে ক্লিক করতেই আপনার ইন্টারনেট উপস্থিতির নিয়ন্ত্রন হ্যাকারদের কাছে চলে যাবার ভয় থাকে। ইন্টারনেটে লোভনীয় বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে তারা প্রভাবিত করে ব্যবহারকারীদের। এতে ক্লিক করলেই অনেক ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণ চলে যায় হ্যাকারদের হাতে।
৩। ছাড়
ছাড়ের কথা শুনলেই আমরা একটু নড়েচড়ে বসি। এটা মানুষের সাধারণ আচরণের মধ্যেই একটি। লোভনীয় পণ্যে ছাড়ের কথা প্রকাশ হলেই তা নিয়ে শুরু হয় নানা অভিমত। অনুমান আর বাস্তবতার মধ্যে বিশাল ব্যবধান থাকায় প্রতারিত হন অনেকেই। বাস্তব অভিজ্ঞতার অভাবে অনেকেই এই ছাড়ের ফাঁদে পড়ে। অনেক সময় ভ‚য়া ছাড়ের বিজ্ঞাপনে বিভিন্ন কোম্পানির অফিসিয়াল লোগো ও ই-মেইল ঠিকানা ব্যবহার করা হয়। এতে মানুষ সাইবার অপরাধের শিকার হয়।
৪। মিষ্টি কথায় ভোলা
আমরা শিশুদের শেখাই কিভাবে সুন্দর করে কথা বলতে হয়। কিন্তু অনলাইনে অপরিচিত কেউ যদি আপনার সঙ্গে মিষ্টি কথায় আলাপ জমায়, তা সেটি ইমেইল বা চ্যাট রুম যেখানেই হোক না কেন, সাবধান। ইন্টারনেটে আমরা যা কিছু ব্যবহার করি তার অধিকাংশই অপরিচিত ব্যাক্তি বা প্রতিষ্ঠানের সাথে হয়ে থাকে। আর অপরিচিতদের সঙ্গে আলাপে মিষ্টি কথায় ভুললেই বিপদ।
৫। লোভ
ইন্টারনেটে কোন কিছুই ফ্রি নয়। ফ্রি ডাউনলোড করতে দেয়া সবকিছুর পেছনে কোনো না কোনো উদ্দেশ্য থাকে। অনেক সময় ভ‚য়া ডাউনলোড লিংকের কারণে ইউজার পড়ে যান বিপাকে। ফ্রি ডাউনলোড করতে গিয়ে অনেক সময় অজান্তে ম্যালওয়্যার ছড়ায় কম্পিউটারে। এটি কম্পিউটারের নিরাপত্তার বড় ধরণের হুমকি।  
৬। আত্মবিশ্বাসহীনতা
মানুষ সাধারণত নিজের আইডি অন্যের কাছে প্রকাশ করতে চায় না। কেউ যদি ইন্টারনেটে আইটি সাপোর্ট দেয়ার প্রস্তাব করে পাসওয়ার্ড চায় এতে সতর্ক থাকুন। এতে সার্ভারের নিয়ন্ত্রন হ্যাকারদের কাছে যাওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায় তাছাড়া অনেক স্পর্শকাতর তথ্য ইন্টারনেটে প্রকাশ পায়। কেউ যাতে আপনার পাওয়ার্ড কোনো ভাবে অনুমান করতে পারে কি-না সেদিকে সতর্ক থাকুন।
৭। অমনোযোগ
খুব কম মানুষই আছেন যারা ই-মেইলে কোন লিংক আসলে তা মনোযোগ সহকারে দেখেন। অযাচিত লিংকে ক্লিক করলেই ম্যালওয়্যার ছড়াতে পারে আপনার পিসিতে। ই-মেইলে নিজের নিরাপত্তার জন্য এসব লিংক চেক করে নিলে ক্ষতিকর প্রোগ্রাম থেকে রক্ষা পাবে আপনার পিসি।
 সমাধান কী?
সাইবার সিকিউরিটির জন্য অ্যালেন উডওয়ার্ড দিয়েছেন ৩ পরামর্শ । এগুলোকে এবিসি হিসেবে উল্লেখ  করা হয়। এগুলো হচ্ছে :
হ্যাকিং সচেতনতায়
-    কোনো বিষয়ে অনুমান করবেন না।
-    কাউকে বিশ্বাস করবেন না। এবং
-    সবকিছু আগে যাচাই করে নিন

(লেখাটি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম থেকে সংগ্রহ করা)


No comments:

Post a Comment